‘প্রেম’ ঠেকাতে সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস! AndNewsBD

ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলের মধ্যে ‘প্রেম’ করছে, এই অভিযোগে তাদের আলাদা করে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 
‘প্রেম’ ঠেকাতে সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস!  AndNewsBD

ভারতের মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে বিতর্ক শুরু হয়েছে এলাকায়। 

কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু ‘আচরণে’র জেরেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, আচরণ যেমনই হোক না কেন, এমন সিদ্ধান্ত কি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিতে পারেন? একই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বিশিষ্টজনেরাও।

বিষয়টি খোঁজ নেবেন বলে জানান জেলা স্কুল পরিদর্শক।

বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দিরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এটি শুধু ছাত্রদের স্কুল। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীরাও পড়ে। 

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২০১। তার মধ্যে ছাত্রী ৪০। দ্বাদশ শ্রেণিতে ২২৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে ছাত্রী ৩৫। 

স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই দুই ক্লাসে কাগজের টুকরো দেওয়া-নেওয়া চলছে বিস্তর। অনেকের দাবি, মেয়েদের কমন রুমের সামনে ছাত্রদের লাইন বা স্কুলের মধ্যে হাতে হাত ধরে হেঁটে যাওয়াও নিয়মিত চোখে পড়ে। ফলে পড়াশোনা শিকে। 

স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, “নিষেধ করলে ক্লাসের মধ্যে বিড়াল-কুকুরের ডাক ডাকে। এর প্রভাব নিচু ক্লাসের ছাত্রদের উপরেও পড়ছে। ছাত্রদের ক্লাস সাসপেন্ড থেকে শুরু করে অভিভাবকদের ডেকেও নালিশ জানানো হয়েছে, কিছুতেই কিছু হয়নি।”

অগত্যা ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা দিনে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে স্কুল। 

স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ পাণ্ডে বলেন, “পরীক্ষামূলক ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের সপ্তাহে আলাদা দিনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীর আচরণের জন্যই এই ব্যবস্থা। তাছাড়া শুনেছি, মালদহের বেশ কিছু স্কুলেই এমনই ভাবে পঠনপাঠন হচ্ছে।”

ছাত্রীদের বড় অংশ জানিয়েছে, ‘‘কিছু ছাত্র স্কুলের মধ্যে উত্যক্ত করত। স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।” পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, “সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস হলে পাঠ্যক্রম শেষ হবে তো?’’ 

এ বিষয়ে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষকের আশ্বাস, “বাড়তি ক্লাস নিয়ে পাঠ্যক্রম শেষ করা হবে।”

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েরা তো একসঙ্গেই বেড়ে উঠবে। তাই ক্লাস বা দিন আলাদা করে সমস্যা সমাধানের পথ সঠিক নয় বলেই মনে হয়। কর্তৃপক্ষের উচিত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলা।’’

মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্কুলে যা-ই ঘটুক, কো-এড ব্যবস্থায় ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা করা যায় না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আনন্দবাজার।

No comments

Powered by Blogger.